ব্যাচমেটদের দোয়া ও শোক অনুভূতিতে সিক্ত ৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশনের প্রয়াত কর কর্মকর্তা ওমর ফারুক

১৩ মে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ মাগরিব এই দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরে বসে ওমর ফারুকের জন্য শোক বইয়ে লিখিত ও বক্তৃতায় তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

এ বিষয়ে ৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন-
পৃথিবীতে মৃত্যুই সবচেয়ে বড় কবিতা। এই কবিতা পড়ার উপলব্দি মানুষের সব সময় থাকেনা। কিন্তু আমরা প্রিয়জনের শোকে এসব গভীরভাবে উপলব্ধি করি, এবং আমরা জীবিত মৃত মিলেমিশে থাকি। প্রিয় ব্যাচমেট ওমর ফারুকের ছোট ছোট দুটি শিশু সন্তান রয়েছে, তাদের কাছে তাদের বাবার স্মৃতি তেমন আর কিছু থাকল না। আমাদের আজকের এই শোক বই হয়ত একদিন ওমর ফারুকের সন্তানদের কাছে অনেক মূল্যবান কিছু মনে হতে পারে।

এ বিষয়ে এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন- দেহ ধারীর মৃত্যু সুনিশ্চিত, তবুও প্রিয় ব্যাচমেট ওমর ফারুকের এতো অল্প বয়সে মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন ও কষ্টদায়ক। যা আমাদের জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বকে আবার মনে করিয়ে দিল। আমি ফারুকের আত্মার শান্তি কামনা করছি।

অন্যান্যদের মধ্যে প্র্যায় সকলে বলেন ফারুক ব্যক্তিজীবনে একজন অমায়িক মানুষ ছিলেন, সে কখনও বিরক্ত হতো না, আমরা আমাদের নানা পরামর্শের জন্য ফারুকের শরণাপন্ন হতাম। ওমর ফারুকের মৃত্যুতে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। ফারুকের দেশকে দেয়ার মতো অনেক কিছু অবশিষ্ট ছিল।

অন্যান্যদের মধ্যে আহসান খান, ইফতেখার আলম ভুঁইয়া, সুমন মাহাবুবুর রহমান, সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম উজ্জ্বল, আবুল খায়ের হিরো, মুশফিকুর রহমান, মিজানুর রহমান, হারুন অর রশিদ, রহমান শুভ্র, তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল হাফিজ, সাইফুজ্জামান চুন্নু, রাশেদ রেজা ডিকেন, মাহফুজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, শাহ্‌ আলম কিরণ শিশির, আরিফুল আলম জুয়েল, মেহেদী মাসুদ ফয়সাল, রুহুল আমিন, মাঝহার ঝুমন, গণেশ ঢালী, মুহিত চৌধুরীসহ অনেকে বক্তৃতায় অংশ নেন, এবং তাঁরা সকলেই ওমর ফারুকের জন্য দোয়া ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের জন্য সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।।

৪ মে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওমর ফারুক মাসুম তার বন্ধুদেরসহ মল্লিকা দিঘীতে গোসল করতে নামেন। পরে তারা সাঁতার কেটে দিঘীর মাঝখানে যান। বন্ধুরা সাঁতরে কূলে ফিরলেও ওমর ফারুক দিঘীর মাঝখান থেকে আর ফিরতে পারেননি। খবর পেয়ে পুলিশ ও চাটখিল ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান চালায়। পরে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ফারুকের লাশ উদ্ধার হয়।

বন্ধুদের সঙ্গে সাঁতার কাটতে নেমে উপ-কর কমিশনার ওমর ফারুক মাসুমের নিখোঁজের পর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারের পাশাপাশি সহকর্মীদের মাঝে। সহকর্মীর অকাল মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা। ৩১তম বিসিএস-এ যোগদানের পর ঢাকায় কর অঞ্চল-১৩-তে উপ-কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন প্রয়াত মাসুম। তার এই মৃত্যু যেন কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তারা।

নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচারক অতীশ চাকমা বলেন, বন্ধুরা তীরে ফিরলেও মাসুম ফিরতে পারেননি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *