জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন। 

১০ ইং জানুয়ারি ১৯৭২।স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে এলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।

এ সময় লক্ষ লক্ষ জনতা তাদের বুকের জমিন বিছিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি এই মহৎ হৃদয়কে অভূতপূর্ব সম্বর্ধনা দেন। সেই জনতার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু ঢাকার রেসকোর্স মাঠে উচ্চারণ করেন দেশ গড়ার দীপ্ত শপথ। তিনি বলেন,

জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন
জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন

‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম, ভাই হিসাবে, নেতা হিসাবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা বোনেরা কাপড় না পায় । এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের মানুষ যারা আমার যুবক শ্রেণি, তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায় ‘।

বঙ্গবন্ধু যখন দেশের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তখন সাত কোটি জনতার এদেশে ছিল কেবল ক্ষুধা আর ধ্বংস্তূপ।

১০ মে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু পাবনার এক জনসভায় বলেন,

‘ভাইয়েরা আমার, জানি আমার কিছুই নাই, আমি কিছু দেবার পারব না। মিথ্যা ওয়াদা আমি করি না। কোনদিন করি নাই।…..আমি তোমাদের তিন বছরে কিছু দেবার পারবো না । ওরা যা ধ্বংস করে গেছে, সে ধ্বংস থেকে দেশকে উদ্ধার করে ওই পর্যায়ে আনার জন্য ১০ বছর সময় লাগতো। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, জনগণ যখন আমাকে ভালোবাসে , আমার কথা শুনে, তিন বছরে অন্ততপক্ষে এই ঘা আমি শুকাতে পারবো।…………… যেদিন সরকার নিই, এক পয়সা বৈদেশিক মুদ্রা আমার কাছে ছিল না । জাহাজ নাই, পোর্ট ভেঙ্গে দিয়ে গেছে । মাল আনতে হলে সময় লাগে। দুনিয়ার কাছে আমি ভিক্ষা চেয়েছি, দুনিয়ার মানুষকে আমি বলেছি আমার দুখীমানুষকে বাঁচাও’।

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে আবার সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় তিনি তার প্রতিটি ভাষণে উচ্চারণ করেন । e.g.

৭ ই মার্চ, ১৯৭১ এর পরে ০২ এপ্রিল ১৯৭২ সালে ঠাকুরগাঁও এর একটি জনসভায় তিনি বলেন, e.g.

‘আগের সংগ্রাম ছিল স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম হবে দেশ গড়ার সংগ্রাম, বাংলার মানুষ যদি পেট ভরে ভাত পায়, বাংলার মানুষ যদি শান্তিতে বাস করে, বাংলাদেশের দুর্নীতি নষ্ট হয়ে যায় , বাংলা যদি শোষণহীন সমাজ হয় ,তাহলে আমি বিশ্বাস করি যারা শহীদ হয়ে মারা গেছেন, ওদের আত্মা শান্তি পাবে । তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ যে আপনারা সকলে কাজ করেন দেশকে গড়ে তুলেন ‘।

এই ক্ষুধামুক্ত শোষনহীন দেশ গড়ে তোলার জন্য কি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিলেন জাতির পিতা! জাতির পিতা মিথ্যা ওয়াদা করেন না অথবা যা বলেন না তা থেকে সরে আসেন না । তাঁর পরিকল্পনায় ছিল কৃষি বিপ্লব। ফরিয়ামুক্ত/ এজেন্ট মুক্ত উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা; দারিদ্র কেন্দ্রিক পাঁচসনা পরিকল্পনা এবং সমবায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা।

২৬ মার্চ, ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবসে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু একটি ভাষণে তার পরিকল্পনার ইঙ্গিত প্রদান করেন, e.g.

‘২৫ বিঘার চেয়ে কম যাদের জমি আছে, তাদের খাজনা চিরদিনের জন্য মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। ইতিপূর্বের সমস্ত বকেয়া খাজনা মাফ করা হয়েছে। ……… এ অবস্থা মনে রেখে পল্লী এলাকায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করতে চেষ্টা করছে। চাষিরা আধুনিক ব্যবস্থা শুরু করেছে এবং সমবায়ের মাধ্যমে সহজ শর্তে ঋণ পাবে। এরই সাথেই আমাদের উদ্দেশ্য হল ভূমিহীন পল্লী চাষীদের জন্য ব্যাপক পল্লী সংগঠন গড়ে তোলা’।

তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পল্লীউন্নয়ন দর্শনের সাথে একাত্ম ঘোষণা করে এভাবেই সমবায়ের মাধ্যমে দেশগঠনের মহান দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।e.g.

০৫ এপ্রিল ১৯৭২। বাংলাদেশ বেতারের ‘দেশ আমার মাটি আমার’ অনুষ্ঠানে রাজনীতির কবি জাতির পিতা তার পরিকল্পনা জানান, e.g.

‘আমি আপনাদের সমর্থন চাই । আমি আপনাদের জানি সমর্থন আছে । কিন্তু একটা কথা, এই যে নতুন সিস্টেমে যাচ্ছি আমি , গ্রামে- গ্রামে বহুমুখী কো-অপারেটিভ করা হবে। ভুল কইরেন না। আপনাদের জমি আমি নেবো না, ভয় পাইয়েন না যে জমি নিয়ে যাবো, তা নয় । ৫ বৎসর প্ল্যানে বাংলাদেশের ৬৫ হাজার গ্রামে একটি করে কো-অপারেটিভ হবে, প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে এ কো-অপারেটিভে জমির মালিক জমিতে থাকবে। কিন্তু তার অংশ যে বেকার, প্রত্যেকটা মানুষ, যে মানুষ কাজ করতে পারে তাকে কো-অপারেটিভ সদস্য হতে হবে এবং বহুমুখী কো-অপারেটিভ হবে । আল্টিমেটালি ৬৫ হাজার ভিলেজে একটা করে কো-অপারেটিভ করা হবে ।পাঁচ বছরের প্ল্যান নেওয়া হয়েছে । তাদের কাছে পয়সা যাবে, তাদের কাছে ফার্টিলাইজার যাবে, তাদের কাছে তেল যাবে, তাদের কাছে দাম যাবে, আস্তে আস্তে ইউনিয়ন কাউন্সিল টাউটদের দল বিদায় দেওয়া হবে, তা না হলে দেশ এগোনো যাবে না। এজন্যই ভিলেজ কো-অপারেটিভ হবে। আমি ঘোষণা করছি আজকে, ৫ বৎসর প্লানে প্রত্যেকটি গ্রামে ৫০০ থেকে হাজার ফ্যামিলি পর্যন্ত কম্পলসারি কো-অপারেটিভে। আপনার জমির ফসল আপনি নেবেন, অংশ যাবে কো-অপারেটিভে, অংশ যাবে গভর্নমেন্টের হাতে ‘।তিনি এভাবেই দেশের জনগন ও সমবায়ের উপর ভরসা রাখতে চেয়েছিলেন এবং সমবায়কেই দেশগঠনের একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

৫ এপ্রিল ১৯৭২ সালে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠে এক জনসভায় তিনি বলেন, e.g.

‘কোনো মানুষ ইনশাআল্লাহ বাংলায় না খেয়ে মরবে না, সেই বন্দোবস্ত আমি করেছি।……….. ইনশাল্লাহ যদি একবার সমস্ত কল ভালোভাবে শুরু হয়ে যায় আর অভাব হবে না । আমি একটা ঘোষণা করতে চাই। আমি আগে করি নাই । কারণ আমি আস্তে আস্তে আগাই। এই বাংলাদেশে যত ডিস্ট্রিবিউটর আছেন, যত হোম সেলার আছেন, যত এজেন্ট আছেন তেলের সাবানের কাপড়ের, যা কিছু হোক, যদি সাতদিনের মধ্যে জিনিসের দাম না কমে, সমস্ত ডিস্ট্রিবিউটর এজেন্টকে আমি ক্যানসেল করে দিব আর প্রত্যেক ইউনিয়ন ইউনিয়নে একটি করে কো-অপারেটিভ স্টোর করবো। …………তোমাদেরকে আমি ব্যবসা করতে দিয়েছিলাম, বাংলার মানুষকে লুট করতে দেই নাই । আপনারা জানেন, আমি মজিবুর যেটা বলি সেটা করবার চেষ্টা করি’।

জনগনকে কতটা ভালবাসলে তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের জন্যে সমবায় ভিত্তিক বিপণন ব্যবস্থার কথা বলতে পারেন, যেখানে টাউট বাটপার, মুনাফালোভীদের কোন স্থান নেই।

জাতির পিতা ১০ মে ১৯৭২ পাবনায় জনসভায় কো-অপারেটিভ ভিত্তিক ন্যায্য মূল্যের দোকান এর কথা বলেন, e.g.

‘জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে অনেকটা। কারণ জিনিসপত্র নাই। জিনিসপত্র আসছে যা প্রোডাকশন করতে পারছে না। আর সঙ্গে সঙ্গে কিছু কিছু চোরাকারবারি ভায়েরা আমার ভুলে গেছেন, তারা একটু একটু করে চোরাকারবারি করে দাম বাড়াবার চেষ্টা করছে। এত চাউল আমি আনতেছি, তাও চালের দাম মাঝে মাঝে বেড়ে যায়। কি মিয়ারা? যখন যুদ্ধ করতে বলেছিলাম তখন লাঠি নিয়ে নামছিলেন। তো চোরাকারবারি মাথায় দুটো বাড়ি দেবার পারেন টারেন না? ভয় নাই আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমি প্রত্যেকটা ইউনিয়নের একটা করে ফেয়ার প্রাইস শপ, ন্যায্যমূল্যের দোকান করবো। প্রত্যেক শহরের ইউনিয়নে তিনটা করে ন্যায্যমূল্যের দোকান করব। ………… এগুলো হবে কো-অপারেটিভ এর মাধ্যমে ‘।

৩০ এপ্রিল ১৯৭২ সালে মে দিবস উপলক্ষে ঢাকায় এক শ্রমিক জনসভায় বঙ্গবন্ধু একটি ভাষণে বলেন, e.g.

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দেশের অর্থনীতির পূণর্গঠনের কাজে হাত দিয়েছে। ……… আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের সমস্ত পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে রয়েছে বন্টন ও সরবরাহ ব্যবস্থার পুনঃবিন্যাস করা । ইতিমধ্যেই বেসরকারি ডিলার এজেন্ট ও সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, যদি তারা অসাধু ও সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ না করে তাহলে তাদের সকল লাইসেন্স পারমিট বাতিল করে দেয়া হবে। আশু ব্যবস্থা হিসেবে সরকার প্রতি ইউনিয়নে এবং সমস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সমবায় ভিত্তিতে ন্যায্য মূল্যের দোকান খোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর ফলে বেসরকারি ব্যক্তিদের বন্টনের ক্ষেত্রে একচেটিয়া কর্তৃত্বের অবসান ঘটবে এবং সমবায় ক্ষেত্রে সাময়িক স্বল্পতার সুযোগে যুক্তিহীন মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রোধ পাবে’।

বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন দেশের প্রতি গ্রামে সমবায় সমিতি গঠন করা হবে। তিনি গণমুখী সমবায় আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সমবায় নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন যে কত গভীরে প্রোথিত ছিল এবং কত সুদূর প্রসারিত চিন্তাসমৃদ্ধ, তা লক্ষ্য করা যায়

১৯৭২ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত তার বক্তব্যের মধ্যে। উক্ত ভাষণে তিনি বলেছিলেন, e.g.

‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে , উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন । এই পরিপেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলন কে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে । কেননা সমবায়ের পথ, সমাজতন্ত্রের পথ- গণতন্ত্রের পথ। সমবায়ের মাধ্যমে গরিব কৃষকেরা যৌথভাবে উৎপাদন যন্ত্রের মালিকানা লাভ করবে। অন্যদিকে অধিকতর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সম্পদের সুষম বন্টন ব্যবস্থায় প্রতিটি ক্ষুদ্র চাষী গণতান্ত্রিক অংশ ও অধিকার পাবে। জোতদার ধনী চাষির শোষণ থেকে তারা মুক্তি লাভ করবে সমবায়ের সংহত শক্তির দ্বারা। একইভাবে কৃষক-শ্রমিক, তাঁতি, জেলে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যদি একজোট হয়ে পুঁজি এবং অন্যান্য উপাদানের মাধ্যমে একত্র করতে পারেন তবে আর মধ্যবিত্ত ধনী ব্যবসায়ী-শিল্পপতিগোষ্ঠী তাদের শ্রমের ফসলকে লুট করে খেতে পারবে না। সমবায়ে মাধ্যমে গ্রাম বাংলায় গড়ে উঠবে ক্ষুদ্রশিল্প যার মালিক হবেন সাধারণ কৃষক শ্রমিক এবং ভ‚মিহীন নির্যাতিত দুঃখী মানুষ।………আজ সমবায় পদ্ধতিতে গ্রামে-গ্রামে-থানায়-বন্দরে গড়ে তুলতে হবে মেহনতি মানুষের যৌথ মালিকানা। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে পাবে ন্যায্য মূল্য, শ্রমিকেরা শ্রমের ফল ভোগের নায্য অধিকার । কিন্তু এ লক্ষ্যে যদি আমাদের পৌঁছাতে হয় তবে অতীতের ঘুনে ধরা সমবায় ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করে একটি সত্যিকারের গণমুখী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে । অতীতের সমবায় ছিল শোষক গোষ্টীর ক্রীড়নক । তাই সেখানে ছিল কোটারী স্বার্থের ব্যাপক ভুমিকা । আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে ঐ ধরনের ভুয়া সমবায় কোন মতেই সহ্য করা হবে না । আমাদের সমবায় আন্দোলন হবে সাধারন মানুষের যৌথ আন্দোলন । কৃষক,শ্রমিক, মেহনতী জনতার নিজেস্ব প্রতিষ্ঠান। ………তাদের দেখতে হবে যে, সমবায় সংস্থাগুলি যেন সত্যিকারের জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠে । জেলে সমিতি. তাঁতী- সমিতি, গ্রামীন কৃষকের সমিতি যেন সত্যিকারের জেলে-তাঁতী-কৃষকের সংস্থা হয়-মধ্যবিত্ত ব্যবসায়ী বা ধনী কৃষক যেন আবার এই সমিতি গুলিকে দখল করে অতীত দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি না করে’। বাংলাদেশ আমার স্বপ্ন, ধ্যান, ধারনা ও আরাধনার ধন । আর সে সোনার বাংলা ঘুমিয়ে আছে চির অবহেলিত গ্রামের আনাচে কানাচে, চির উপেক্ষিত পল্লীর কন্দরে কন্দরে বিস্তীর্ন জলাভূমির আশেপাশে আর সুবিশাল অরণ্যের গভীরে। ভাইয়েরা আমার, আসুন সমবায়ের মাধ্যমে যাদুস্পর্শে সুপ্ত গ্রাম বাংলাকে জাগিয়ে তুলি । নব-সৃষ্টির উন্মাদনায় জীবনের জয়গানে তাকে মুখরিত করি । আমাদের সংঘবদ্ধ জনশক্তির সমবেত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলতে হবে সোনার বাংলা । এ দায়িত্ব সমগ্র জাতির , প্রত্যেকটি সাধারন মানুষের এবং তাদের প্রতিনিধিদের । তবেই আমার স্বপ্ন সার্থক হবে। সার্থক হবে শহিদের আত্মত্যাগ, সার্থক হবে মাতার অশ্রু“। রাজনৈতিক স্বাধীনতা তার সত্যিকারের অর্থ খুজে পাবে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বাদে, আপামর জনসাধারনের ভ্যাগ্য উন্নয়নে । তবেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে রুপায়িত হবে সমাজতান্ত্রিক নীতির এবং সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌছাবো সমবায়ের মাধ্যমে । জয় বাংলাদেশ সমবায় আন্দোলনের। জয় বাংলা’।

সহজ কথায় শোষনহীন ক্ষুধামুক্ত শ্রেণী বৈষম্য বিহীন যে সোনার বাংলার স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, তার সফল বাস্তবায়ন ও অর্জন তিনি কেবল ও কেবলমাত্র সমবায় প্রনালীর মাধ্যমেই করতে চেয়েছিলেন ।e.g.

তাইতো ০৩ জুলাই ১৯৭২, কুষ্টিয়ায় এক জন সভায় বাংলার মানুষের কাছে তিনি জানান তার দ্বীপ্ত অঙ্গিকার, e.g.

‘আমি বাংলার মানুষকে ভালোবাসি । বাংলার মানুষেরা আমাকে ভালোবাসে । আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করবো । আপনাদের কাছে আমার দাবি রইল, যদি কোন দিন আমি দেখি যে বাংলার মানুষ আমাকে ভালোবাসে না, সেদিন, মনে রাখবেন, এই প্রধানমন্ত্রীত্ব আমি লাথি মেরে তাড়িয়ে দিয়ে আমি আমার বাড়িতে ফিরে যাবো। আমি চাই বাংলার মানুষের মুক্তি । আমি চাই বাংলার মানুষ সুখে পেট ভরে ভাত খাক । আমি চাই অত্যাচারের অবিচার বন্ধ হোক । আমি চাই দুর্নীতি ঘুষখোর ধ্বংস হোক’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বভাবগতভাবেই একনিষ্ঠ সমবায়ী এবং সমবায় চিন্তক ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সে অসমাপ্ত প্রয়াসকে সার্থক করতে সমবায় বিভাগের দায়িত্ব ও ভুমিকা অনেক । তাহলেই জাতির পিতার প্রতি সঠিক পূস্পার্ঘ অর্পণ করা হবে। আজ এ পর্যায়ে সমবায় বিভাগের একজন কর্মী হিসেবে আমার প্রত্যয় এই যে, বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন এবং সমবায় দর্শনকে সামনে রেখে আমাদের সমবায় আন্দোলন আরও শাণিত হোক।

জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন। 
গ্রন্থসূত্রঃ
১। ‘ওঙ্কারসমগ্র’; নির্ঝর নৈশব্দ।e.g.

জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন

লেখক- 

Md. Salimul Alam Shahin 
Principal (Deputy Registrar)
Cooperative Zonal Institute, Naogaon. 
Cell: +8801713149122
Office: +88074161190 
জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন
মোঃ সেলিমুল আলম শাহিন অধ্যক্ষ-উপনিবন্ধক, আঞ্চলিক সমবায় ইন্সটিটিউট, নওগাঁ।
মোঃ সেলিমুল আলম শাহিন
অধ্যক্ষ-উপনিবন্ধক, আঞ্চলিক সমবায় ইন্সটিটিউট, নওগাঁ।

জাতির পিতার ভাষণে সমবায় স্বপ্ন – ৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশন।e.g.

Outbound links 
৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশন 
৩১তম বিসিএস ক্যাডার এসোসিয়েশন 
 

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *