কবি আল হাদীর ‘মানব কথা‘ কবিতার বইটিতে কবি মনের যে পরিচয় পাই তারি দুই একটি লাইন লেখাই এখানে আমার উদ্দেশ্য।
‘মানব কথা‘য় মানুষের ইতিহাস ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন (সম্ভবত)। মানব সভ্যতার ইতিহাসে যে জীবন কথা রয়েছে তা তিনি বিস্ময় (!) অথবা সংশয় ভরে প্রকাশ করেছেন। এই নতুন পৃথিবীতে কারা যেন পুরাতন হয়ে আছে! মৃতের কবিতাগুলো হয়ে উঠেছে অদেখা নির্মাণ! যে কবিতাগুলো রাত পোহালেই তার ছন্দ ভুলে যায়!
কবিরা হয়ে উঠেছে স্বৈরাচারী!
তিনি কিছু নতুন নতুন শব্দ–সমষ্টি প্রয়োগ করেছেন। বিষাক্ত শস্যতট, বিলুপ্ত মরুভূমি, চিত্রকানন অগোছালো, সাদা কাগজের মত মূর্খ, পৃথিবী একটা মৃত মানুষের বিস্ময়।
মানুষ হয়ে গেছে অনুভূতিহীন, তার সময়ের চেয়ে নিষ্ঠুর আর ধূর্ত, তিতে হয়ে গেছে তার চোখ। এক সময় সে পরামর্শ দেয় মিথ্যা কথা বলার। মৃত মানুষগুলোর সূর্য ছাড়া উৎসাহ দেয়ার কেউ থাকেনা। মানুষ তাকিয়ে থাকে পথের চূড়ায়। এই সব কিছুই কবিকে বিস্মিত করে তোলে।
অভাব, দীর্ঘ পথের ক্লান্তি,মানুষের মনে জানোয়ারের জন্ম, মানুষের স্বভাব কবিকে বিস্মিত করে তোলে। নাছোড়বান্দা মানুষগুলো পুরাতন শোক নিয়ে বেঁচে থাকতে ভালোবাসে।
পৃথিবীতে রচিত হয়েছে মরুভূমি কাব্য, আধিপত্যবাদ, তার মধ্যেই পথে একজন কবির (বঙ্গবন্ধুর) সাথে দেখা হয়। তিনি সন্ধান পেয়েছেন বনভূমির, মরুভূমির, উপত্যকার, ধানের বতর, ডুমুর বাগান, লাঙ্গলের ফলার, বাবলা ফুলের, রংধনু রঙের, বাইগার মধুমতির, সূর্যের, গণ গ্রন্থের, পাথরের দেশের, চিত্রকরের, প্রেমিকের সম্পদের, কাব্য শাবকের।
সর্বশেষে কবির এক লাইনের একটি কবিতা বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ‘সেই গণগ্রন্থখানা নিশ্চয়ই তুমি পড়েছিলে?’
যা কবির মনের একান্তের বিস্ময়ের কিছু মনোভাবনা।
জামান শামস
স্নাতকোত্তর বাংলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।